আজ ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা

পাবনা সদর প্রতিনিধিঃ পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. হুমায়ুন কবির মজুমদারের বিরুদ্ধে ৫৬ লক্ষ টাকা দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। দুদক, সজেকা, পাবনার মামলা নং ০৪, তাং ৭/৬/২০২১।

মামলা সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর জেলার শ্যামপুর গ্রামের মৃত আহমেদ মিয়ার ছেলে হুমায়ুন কবির মজুমদার(৫৬) সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় অসৎ উদ্দেশ্যে ভূয়া আবেদনপত্র ও ভাউচারাদী প্রস্তুতপূর্বক অপরাধমূলক অসদাচারনের মাধ্যমে নিজেই অনুমোদন করত কলেজের ছাত্র সংসদ, উন্নয়ন তহবিল, বিবিধ তহবিল এবং ভর্তি কার্যক্রম ও ফরম পূরন তহবিলের ৫৬ লক্ষ ৮ হাজার ছিয়াশি টাকা অগ্রণী ব্যাংক লিঃ কলেজ গেইট শাখা, পাবনা হতে চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করত অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে আত্নসাত করে দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

 

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, দুর্নীতির দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কাযার্লয়, পাবনা‘র ই/আর নং ১৯/২০১৭ অনুসন্ধানকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সংগৃহীত / প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বক্তব্য পযার্লোচনায় দেখা যায় যে, অভিযুক্ত ড.হুমায়ুন কবির মজুমদার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ পাবনাতে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ হতে অদ্যবধি অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত আছেন।

 

তিনি প্রতিষ্ঠান প্রধান ও আয়ন-ব্যয়ন কর্মকতার্ ( ডি.ডি.ও) হিসেবে কলেজের নামে চলমান ২৯ টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করেন। সরকারি কলেজের সংশ্লিষ্ট হিসাব হতে টাকা উত্তোলন / ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারি বিধি বিধানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় হতে গত ৬.৭.২০১৪ সনে জারীকৃত পরিপত্র প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক ছিল।

 

উক্ত অধ্যক্ষ সরকারি বিধি বিধান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র তোয়াক্কা না করে গত ২০১৬ – ১৭ অর্থ বছরে ছাত্র সংসদ তহবিল: সংসদের কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও উক্ত তহবিল ( হিসাব নং ০২০০০০৫৩৫২৫৮৯) হতে ৫ জন ছাত্রনেতা ও কর্মচারীর নামে জালিয়াতিমূলকভাবে ভূয়া আবেদনপত্র ও বিল / ভউচার তৈরী করে নিজেই অনুমোদন করত: ১৫ টি চেকের মাধ্যমে ৫ লক্ষ ২ হাজার টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্নসাত করেন।

 

উন্নয়ন তহবিল: উন্নয়ন তহবিল ( হিসাব নং ০২০০০০৫৩৫২৬৫৫) হতে উন্নয়ন কমিটির সুপারিশ ছাড়াই কোটেশন ব্যতীত ভূয়া আবেদন ও বিল / ভাউচার প্রস্তুতপূর্বক নিজেই অনুমোদন করত: ৩৮ টি চেকের মাধ্যমে ১৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ২৩৮ টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্নসাত করেন।

 

বিবিধ তহবিল: বিবিধ তহবিল ( হিসাব নং০০০০৫৩৪২৮১৬) এর অর্থ ব্যয় সংক্রান্ত বাস্তবায়ন কমিটি গঠন না করেই ভূয়া আবেদনপত্র ও বিল / ভাউচার প্রস্তুতপূর্বক নিজেই অনুমোদন করত: উক্ত তহবিল হতে ৩৭ টি চেকের মাধ্যমে ১৩ লক্ষ ৪ হাজার ৪২ টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্নাসাত করেন এবং বে-সরকারি আদায় তহবিল থেকে ভর্তিকার্যক্রম ও ফরম পূরন তহবিলে ( হিসাব নং ০২০০০০৫৩৫২৮২৩ ও ০২০০০০৫২৮৪) তিনি সরকার নির্ধার্রিত ফিসহ অতিরিক্ত অর্থ আদায়পূর্বক সমুদয় টাকা হিসাব দুটিতে জমা করেন।

 

উক্ত হিসাব হতে ডিডিও হিসেবে তার চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের সুযোগ নেই। কিন্তু তিনি ২০১৬ – ১৭ অর্থ বছরে সরাসরি ২৮ টি চেকের মাধ্যমে ১৮ লক্ষ ৩ হাজার ৭ শ ৬ টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্নসাত করেন।

 

এ বিষয়ে পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. হুমায়ুন কবীর মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অীভযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি সম্পুর্ন ষড়যন্ত্রমুলক। আইনগতভাবে মামলা মোকাবেলা করা হবে।

 

দুর্নীতি দমন কমিশন পাবনা সমন্বিত অফিসের উপ-পরিচালক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এখন যে কোন সময় তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap