আজ ১৮ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চোর ধরি চল- বুকে রাখি বল।

 

– মুহাম্মদ শামসুল হক বাবু

ত্রাস সন্ত্রাস ভয় ভীতির মাঝে নাই কোনো স্মৃতি
মানুষে মানুষে আজ বন্ধন নাই- নাই মধুর প্রীতি।

এসো দু’চোখ মেলে এই সমাজের চোর ধরি
জঘন্যতম গোপন কুকীর্তিগুলো প্রকাশ করি।

যেখানে সেখানে আছে বদের চোর কুঠুরি
চল সবাই সেখানে মারি বিশাল এক হাতুড়ি।

ঐ বেটা চোরার ঘরের চোর মস্ত বড় চোর
মানুষ হয়েও লাজলজ্জা ভুলে গেলি তোর।

এ জগৎ সংসার কি পৈতৃক ভিটাবাড়ি বল?
শালার পো শালা নাহি বলি- তোরা চোট্টার দল।

তোর লাগে না লজ্জা লাগে শুধুই যে মোর
চালখোর ডালখোর তেলখোর তুই মহাচোর।

কেউ করে পুকুর চুরি কেউ করে আবেগ
জন্মের পর অমানুষ হলি তোর নাই বিবেক।

সাড়ে তিন হাত শরীরে মৃত মানুষের গন্ধ
মরে গেলেই চোরের বদ অভ্যাস হয়ে যাবে বন্ধ।

ধলেশ্বরী ধল্লা বুড়িগঙ্গা ও তুরাগের পঁচা
ওখানেই বাস করবে গেঁড়ে দেব মাচা!

যেখানে দুর্গন্ধযুক্ত ডাস্টবিন ছাই কয়লায়
তুই অসামাজিক তাই তোর স্থান ময়লায়।

ওরে শরম নাই কি তোর কেমনে করলি চুরি
রাত দিন সুযোগ বুঝে চুপিসারে কোপ মারি।

তুই তেলাপোকা তুই ছাড়পোকা বা উঁকুন
তোর চেয়ে অনেক ভালো ওই বন্য শকুন।

তুই চাইনিজ বাদুড়- হ্যামিলনের সেই ইঁদুর
নববঁধুর ঘরে সিং খুদে নষ্ট করলি কত সিঁদুর!

বাঙ্গালি জাতির উঁচু শিরে নত হলো মাথা
বলেছে বঙ্গবন্ধু পেয়েছিলেন বুকে তে ব্যথা।

দেশ বাঁচাতে করি মহাবিপ্লব ওই মহাবিপদে
অসহায়কে রাষ্ট্র ত্রান দেয় সমূহ আপদে।

দূর্ণীতিবাজ লুটেরা গাদ্দার সেজেছে বঙ্গপাল
তোদের চেয়ে অনেক ভালো প্রকৃতির পঙ্গপাল।

সরকার যদি সাহায্য দেয় কাফনেরও কাপড়
চুরি করে তোরা বানাবি পাঞ্জাবি ঢাকবি গতর।

কাঁপে বিশ্ব কাঁপছে মানুষ পশুপাখির প্রাণ
চোরা চুরি করে অন্যের সম্পদের নেয় ঘ্রাণ।

ওজনে চুরি টাকা চুরি ইজ্জত মারি গরু চুরি করে
কপাল পোড়া ধরতে পারলে গণধোলাই খাবে পরে।

এই চোরার সাথে থাকে চোরকাঁটা ঐ চুন্নি
সত্যি কে যেন বলেছিল তোরা জাতে ফহিন্নি।

কত শত যন্ত্রণায় কাতরায় ওই ক্ষুধার্ত
ঐদিকে চোরেরা ভণ্ডামি করে ওরা ধূর্ত।

আয় রে- চোর ধরি চল- বুকে রাখি বল
হাগু মুতু করে ওদের মুখে ঢেলে দে মল।

একাত্তরে জমিনে লাশের পর লাশ পরে থাকে
কুকুর শকুন উড়ে এসে খায় ঝাঁকে ঝাঁকে।

ওরে পীপিলিকার দল- শিয়াল ওরে হায়না
তোকে পাঠিয়ে দেব করোনার দেশ চায়না।

অসহায়কে সেবা দাও- দেখে যা ঘরে ঘরে অভুক্ত
সম্বলহীনকে সম্বল দিলে হবে মুক্ত হবে তোর ভক্ত।

অনাহারে কতজনে মরে পড়ে থাকে রাস্তায়
অনেক লোকে লজ্জার সাগরে ডুবে কাতরায়।

হাত পাতার অভ্যাস যাদের তারা বেঁচে যায়
অন্যেরা হাত মুখ ধুয়ে অলস সময় কাটায়।

ব্যাধির রোগী মরে যায়- মানুষ করে হায় হায়
ঔষধ সামগ্রী চুরি করে ভরে খালি নৌকায়।

কিছু জনে উপবাসে থেকেও করে না মাথা নত
দুঃখী মানুষের করুণ কাহিনী বাড়ছে শত শত।

শিশু কাঁদে- বৃদ্ধ কাঁদে- কাঁদে বাংলার জননী
তোরা ওমরের সেই ঐতিহাসিক কথা শোন নি!

পেটের ক্ষুধা বড় ক্ষুধা রাত শেষে আসে না ভোর
নিজে খেয়ে পরকে না দিলে গজব আসবে তোর।

একদিন তোর বিচার হবে জীবনে বা মরনে
ঠাঁই পাবি না যতই পড় রাজা-বাদশার চরণে।

গোপনে ও প্রকাশ্যে করলি হরেক প্রকার চুরি
রাজনৈতিক নেতা নেত্রী বলে চলছে বাহাদুরি।

তুমি দেখেছো কি চোরা পাহাড়-চোরা বালি
তোর চেয়ে ভালো ঐ ফুল বাগানের মালি।

কি রে বাটপার- কি রে চিটার- আর ব্যভিচার
মানব রূপী দানব তুই একনাম্বার বিশ্ব জানোয়ার।

ওরা ধর্মান্ধ ওরা অন্ধ ওরা ভন্ড সাধু-সন্ন্যাসীর দল
লালসালুর মাঝে লুকিয়ে আছে যত পাপের ফল।

মুখে মধু অন্তরে বিষ- কি যে দেখাইলে ছলাকলা
জনতার ভাগ্যে রেখেছিস ঝুলিয়ে খোসা আর মুলা।

ভোটারের ভোটে ক্ষমতা পেয়ে কথা ভুলে গেলি
ভবিষ্যতে তোদের নিয়ে কীভাবে পথ চলি?

ভালো হওয়ার এখনো সময় আছে রাত পোহাবার
কেড়ে খাছ নে ওরা ক্ষুধার্ত মানুষ ওরা অনাহার।

অভিশাপ দিলে ধ্বংস হবি বলিয়াছে রবির কবি
তোর ঘরে ঝুলানো থাকবে মৃত মানুষের ছবি।

দুধের বাচ্চাটি অন্নের জন্যে ছটফট করে ঘরে
দিশেহারা হয়ে মাতা তাঁর সুন্দর চুল বিক্রি করে।

অভাবের তাড়নায় নারীর ইজ্জত বিলিয়ে দিয়েছে
তবুও এ পৃথিবীর সুখের জন্যে নিজে বলি হয়েছে।

খোলা আকাশের নিচে না খেয়ে কত লোকে ঘুরে
বাঁচার জন্যে আর্তচিৎকার করে রাস্তার মোড়ে।

কি আজব কারবার এ নিয়ে চলে দরবার
ভন্ডরা সুযোগ পেলে তেড়ে আসে মারবার।

অসত্যের রাজ্যে জীবন আজ বিপন্ন
নারীকে করেছো তোরা ভোগের পন্য।

জ্বলন্ত আগুনকে করলে হরন হবে তোর মরন
রোষানলে পড়লে জুতার মালায় তোর হবে বরণ।

ধান্ধাবাজি চাঁদাবাজি যত আছে আকাম-কুকাম
ঘৃণারপাত্র তোরা- সমাজে নাই কোনো দাম।

আমার দেশে চলে চোরের উপর বাটপারি
চোরের মায়ের বড় গলায় দিবে কিন্তু আড়ি!

মন চোর গোলাম চোর সিঁধেল চোর বাহিনী
কোনো চোরে শোনে না কোনো ধর্মের কাহিনী।

চুরিচামারি করাই কি তোর পেশা ও নেশা
তোর চেয়ে ভালো ঐ নিষিদ্ধ পল্লীর বেশ্যা।

যদি আমি পেতাম তোকে মেখে দিতাম কালি
মাথা ন্যাড়া করে লাগাইতাম পঁচা ডিম এক-হালি।

তোর বাড়িতে টাঙ্গিয়ে দেব চোরের নাম ফলক
মরে গেলে কবর পার্শ্বে থাকবে ঘৃণার পদক।

হে বন্ধু চোর পাহারা দিয়ে লাভ কি এ বড়ই উৎপাত
চোর মরে সাত ঘর মজায়ে তাই করি চোর প্রপাত!

তুই নব্য রাজাকার মীরজাফর বেঈমান পাষাণ
আমাদের ছিল তোর প্রতি অগাধ ঈমানের নিশান।

দেখেছি ও শুনেছি চোরে চোরে কুটুম্বিতা ভাই
মোদের কি তাহলে আর কোনো উপায় রক্ষা নাই?

তবে জেনে রেখো সব কিছুরই আছে কিন্তু শেষ
যদি দাও দণ্ডাদেশ মুক্তহবে স্বাধীন ভূমি বাংলাদেশ

হবে ভোর চোর ধরি চোর- ধূতি খুলব করিলাম পণ
প্রিয় মাতৃভূমি রক্ষায় ফাঁসির মঞ্চে যেতে চায় মন।

পরমাণু ও এটম বোমা ছুঁড়ে আকাশ দেব না ফাঁড়ি
কলমের খোঁচায় দিলাম মারি শব্দ বোমা ছাড়ি।

জয় বাংলার শ্লোগান তুলে পাপীর শাস্তি দেই
সোনার বাংলা গড়তে হলে এর বিকল্প নেই।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap