বাংলা পেপার ডেস্ক:
রমজানকে ঘিরে ইফতারে মানুষের আয়োজন থাকে নানামুখী, কিন্তু এ আয়োজনে কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাদ্য থাকে সেটাই দেখার বিষয়। তাই বিশেষজ্ঞরা রমজান উপলক্ষে বিশেষ খাবারের তালিকা ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার পর সেহরি ও ইফতারে খাদ্যদ্রব্য বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে।
অনেকেই মনে করেন, সেহরি ও ইফতারে ভারী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। কিন্তু সব ধরনের ভারী খাবার রোজদারের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। তাই উচিত সারাদিন শক্তি পাওয়া যায় এমন খাবার গ্রহণ করা। আসুন জেনে নেই সেহরিতে আমাদের কি খাওয়া উচিত আর কি খাওয়া উচিত না-
সেহরিতে যা যা খেলে ভালো :
* যেসব খাবার প্রচুর পরিমাণ আঁশসমৃদ্ধ সেগুলো শোষণ করে নিতে শরীর বেশি সময় নেয়। ফলশ্রুতিতে রোজা রাখা অবস্থায় অতিরিক্ত সময়ের জন্য শরীর থাকে শক্ত সামর্থ্য এবং খিদে পায় কম। কলা, আম, গাজর, আপেল, বাদাম, ডাল হতে পারে আঁশ সমৃদ্ধ খাবারের উদাহরণ।
* রাতের খাবার কিছুটা হালকা ও সহজে হজম হয়, এমন হওয়া উচিত। তাই ভাতের সঙ্গে সবজি বেশি থাকা চাই। যেমন- লাউশাক, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া, শসা, পটোল, ঝিঙে, কচুশাক, কচু ইত্যাদির তরকারি, এক টুকরা বড় মাছ অথবা মাংস খেতে পারেন। তবে কম মসলা দিয়ে রান্না করা মাছ বেশি উপকারী।
* সেহরিতে ভাত, রুটি, মসুর ডাল, শাকসবজি বেশি পরিমাণে খাবেন। শর্করা ও আমিষজাতীয় খাবারগুলো পাকস্থলীতে পরিপাক হতে অনেক সময় লাগে। তাতে ক্ষুধা কম হয়।
* রাতের খাবারের পর শুকনো ফল খেতে পারেন। যেমন- কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম, খেজুর, আখরোট, শুকনো নারিকেল, কিশমিশ। এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি ও পুষ্টিগুণ।
* সেহরি খাওয়ার পর দুধ খেতে পারেন একটু পানি মিশিয়ে অথবা দুধ-ভাতের সঙ্গে কলা। ডায়াবেটিস থাকলে চিনি খাবেন না।
* যেসব ফলে প্রচুর পরিমাণ পানি রয়েছে সেগুলো খেলে পানি তৃষ্ণা কম পাবে। দেহের পানিশূন্যতা পূরণে সেহরিতে খেতে পারেন তরমুজ, আপেল, তাল কিংবা কমলা।
সেহরিতে যা যা না খাওয়া ভালো :
* চা, কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় আপনার তৃষ্ণা এবং শরীরের তাপমাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিবে।
* সেহরিতে অনেক বেশি পানি পান ডেকে আনতে পারে হজমজনিত সমস্যা। তবে এটা অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কতটুকু খাবার গ্রহণ করতে অভ্যস্ত তার ওপর।
* সেহরি বা ইফতারে পোলাও, বিরিয়ানি জাতীয় খাবার খাবেন না। এগুলো একদমই স্বাস্থ্যসম্মত হবে না। তেল মসলা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
* পরিহার করুন অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার। কারণ এ জাতীয় খাবার খেলে দেহে পানিশূন্যতা তৈরি হয়।
* সারাদিন খেতে পারবেন না বলে সেহেরিতে পেটভর্তি খাবার খাবেন না। পারলে এক-চতুর্থাংশ খালি রাখবেন। এতে অলসতা আসবে না। আর একবারে বেশি পানি পান করবেন না।
* খুব বেশি মসলাদার এবং ঝাল খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এগুলো খেলে বুক জ্বালাপোড়া হয় এবং হজমে সমস্যা করে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার পরিহার করুন। এতে হজমের সমস্যাসহ এসিডিটি ও নানা জটিলতা হতে পারে।