আজ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্ত্রীর সন্ধান জানতে স্ত্রীর সহকর্মীর শিশুকে অপহরণ

বিশেষ প্রতিনিধি সাভার ( ঢাকা)

আশুলিয়া স্ত্রী পরকীয়া করে চলে যাওয়ায় স্ত্রীর বান্ধবীর দেড় বছরের শিশুকে অপহরণ কর ওই স্ত্রীর স্বামী। অপহরণের ৩ মাস পরে অপহরণকারীসহ শিশুটিকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব-৪।

৩১ মে দুপুরে টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী থানার পাইক্কা গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে অপহৃত শিশু আঁখি’কে উদ্ধার ও অপহরণকারীকে আটকের বিষয়টি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৪ এর(CPC-2) কোম্পানি কমান্ডার।

এর আগে গত ৩১ মার্চ ২০২২ ইং তারিখ বৃহস্পতিবার সকালে আশুলিয়া থানার শিমুলিয়ার টেঙ্গুরী এলাকা থেকে দেড় বছরের শিশু আঁখি’কে অপহরণ করে রাশেদুল নামের এক যুবক। শিশুটির বাবা সাদ্দাম হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ও তাঁর মা মিরা আক্তার পোশাক শ্রমিক। তাঁরা আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের টেঙ্গুরী এলাকায় আলী হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
০১ এপ্রিল ২০২২ তারিখ শিশুটির দাদা বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি শিশু অপহরণ মামলা দায়ের করেন। র‌্যাব-৪ অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে।

অপহরণকারী রংপুর জেলার মোঃ রাশেদুল ইসলামকে (৩০) রংপুর থেকে ও রংপুর জেলার রোকসানা বেগমকে (৩৫ )গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়।

অপহরণের কারণ হিসেবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পারে যে, অপহরণকারী মোঃ রাশেদুল ইসলাম (৩০) বিগত ০২ বছর যাবৎ আশুলিয়া জিরানী বাজার কলেজ রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতো। সে পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী । তার স্ত্রী নুরজাহান ও অপহৃত শিশুটির মা মিরা আক্তার আশুলিয়ায় একই গামেন্টসে চাকরি করতো। যার সুবাদে দুজনের মধ্যে সু-সম্পর্ক ছিলো। একপর্যায়ে অপহরণকারীর স্ত্রী পরকিয়ায় আসক্ত হয়ে তাদের ০৭ বছরের শিশু সন্তানকে রেখে প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যায়। কার সাথে পালিয়েছে এবং কোথায় আছে এ বিষয়টি অপহৃত শিশু আঁখি আক্তার এর মা মিরা আক্তার জানে এরকম সন্দেহের বশবর্তী হয়ে বেশকয়েকদিন মিরা আক্তার এর নিকট জিজ্ঞাসাবাদ করে অপহরণকারী রাশেদুল। তার স্ত্রীর বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে অপহৃত শিশুর মা কিছু বলতে না পারলে, আসামীর স্ত্রীর সঠিক অবস্থান জানার উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক সাদ্দাম ও মিরা দম্পতি কাজে চলে যাওয়ার পরে গত ৩১ মার্চ ২০২২ তারিখ সকালে কৌশলে শিশু আঁখি আক্তারকে নিয়ে পালিয়ে যায়। অপহরণের এক সপ্তাহ পরে রাশেদ শিশুটির পিতা-মাতাকে ফোন করে জানায় যে, শিশুটি তার হেফাজতে আছে এবং তার স্ত্রীর সঠিক ঠিকানা জানালে শিশুটিকে ফেরত দেওয়া হবে। এতে কাজ না হলে লোভের বশবর্তী হয়ে অপহৃত আঁখির বাবা-মার কাছে ৩০,০০০/- টাকা মুক্তিপন দাবি করে এবং সেই মোতাবেক অপহরণকারীর বিকাশ নাম্বারে ২০,০০০/- টাকা পাঠায় শিশুটির পিতা ।
আসামী রাশেদের বক্তব্য অনুযায়ী ঘটনার দিনই অপহৃত শিশু আঁখিকে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকায় তার ফুপু রোকসানা’র কাছে নিজের মেয়ে পরিচয়ে রেখে সে গ্রামের বাড়ী রংপুরে গিয়ে আত্মগোপন করে। আসামী রোকসানা’র নিজের কোন কন্যা সন্তান না থাকায় সযত্নে মাতৃ আদরে শিশু আঁখিকে লালন-পালন করতে থাকে। পরে শিশুটিকে আসামী রাশেদের ফুপু রোকসানা’র হেফাজত থেকে উদ্ধার করে র‌্যাব।

র‌্যাব-৪ এর(CPC-2) কোম্পানি কমান্ডার আরো বলেন আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতেও এইরুপ শিশু অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪ এর জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap