আজ ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অভিযানে বন্ধ হলেও রাতের আধারে পুনরায় চালু হচ্ছে অবৈধ ইটভাটা

বিশেষ প্রতিনিধি:

ধামরাইয়ে অবৈধ ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে, পরিবেশ দূষণ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ১০টি অবৈধ ইটভাটাকে অর্ধকোটি টাকা জরিমানা আদায় করে, তা বন্ধ করে দেয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই রাতের আধারে অর্ধেকেরও বেশি ইটভাটা ফের সচল হয়েছে, বাকি বন্ধ থাকা অবৈধ ইটভাটা গুলো চালু করার চলছে প্রস্তুতি।

গত মঙ্গলবার (২৮-১২-২০২১) দিনভর ধামরাই উপজেলার কুশুরা ইউনিয়ন ও সোমভাগ ইউনিয়নের ইটভাটা গুলোতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদ।

অভিযানের দুই দিন যেতে না যেতেই অবৈধ ইটভাটার মালিকরা যেন মেতে উঠেছেন লুকোচুরি খেলায়। যার ফলে আবারও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে এবং ফসলি জমি ধ্বংস হচ্ছে।

ফসলি জমির মাটি কাটা, অবৈধ ড্রাম ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিহীন ইটভাটায় ভ্রাম্যমান আদালত কতৃক দিনের বেলা বন্ধ করে দেয়া হলেও রাতের আঁধারে তা পুনরায় চালু করছে এইসব অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাদের অর্থ জরিমানা, অবৈধ ব্যবসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম পুড়িয়ে দেয়া বা ধ্বংস করা হলেও তাদের কোনভাবেই দমানো যাচ্ছে না।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমান আদালতে বন্ধ করে দেয়া ১০টি ইটভাটার মধ্যে ৭টি পুনরায় চালু করা হয়েছে। আবার বাকি ৩টি ইটভাটা চালু করার জন্য মেরামত করা হচ্ছে। ধামরাইয়ে এরকম প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। যার ফলে পরিবেশ দূষণ সহ ধ্বংস হচ্ছে ফসলি জমি। পরিবেশ অধিদপ্তরের এমন অভিযান পরিবেশের কোন উপকারে আসছে না। অবৈধ ইটভাটা গুলো সব স্থায়ীভাবে বন্ধ করুক, না হয় জরিমানা নেয়া বন্ধ করুক। জরিমানা করার পরও যদি অবৈধ ইটভাটা চলে তাহলে কৃষি জমি ও পরিবেশের ক্ষতি তো হবেই। জরিমানার পড়ে এ সকল অবৈধ ইটভাটা গুলো আরো দ্বিগুণ শক্তি দিয়ে কাজ শুরু করে। জরিমানার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা মরিয়া হয়ে ওঠে এতে তোয়াক্কা করেনা পরিবেশের। এমন অভিযান করা হোক যাতে কৃষি জমি ধ্বংস ও পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা পায়।

খোজ নিয়ে জানা যায় এসব অবৈধ ইটভাটা ও মাটি ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে শক্তিশালী সরকারদলীয় নেতা ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান সহ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পদ পদবির সিন্ডিকেট।

বন্ধ করে দেয়া এমএমবি ব্রিকস (মক্কা মদিনা) ইটভাটার মালিক আমজাদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাকে ৫লক্ষ্য টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
তাহলে ইটভাটা কেন চালু করেছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন আপনার জানার দরকার নেই। আপনাকে কৈয়ফত দিতে আমি বাধ্য নই।

এবিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। আপনি পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করুন।

বন্ধ করে দেয়া অবৈধ ইটভাটা পুনরায় চালু করা হয়েছে এবং ধামরাইয়ে বাকি যেসব অবৈধ ইটভাটা রয়েছে সে বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোঃ রাজীব তাঁর সিনিয়রের সাথে কথা বলতে বলেন।

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জহিরুল ইসলাম তালুকদারকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap