আজ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জীবন যুদ্ধে এনামুল, বাচঁতে চাই তার পরিবার

ফজলুল হক, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:

 

সেই কিশোর বয়স থেকেই জীবন যুদ্ধে নেমেছিলেন এনামুল (৪৪)। কাজ শুরু করেন মোটর শ্রমিক হিসেবে। এর দীর্ঘদিন পর ২০০৮ সালে উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যে ডুবাই। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়না এনামুলের। জীবন বদলানোর ওই চেষ্টায় আরো সংকটে পতিত হয় তার জীবন। কোম্পানির অবস্থা ভাল না হওয়ায় ফিরে আসতে হয় প্রবাস থেকে। এরপর আবারো দেশে ফিরে কালিয়াকৈর বাজারে এসে মোটর মেরামতের কাজে যোগ দেন।

 

২০১৩ সালে কিছু শারিরিক জটিলতা নিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন এনামুল। ডাক্তার জানায় তার একটি কিডনিতে সমস্যা। তবে ঔষধ সেবনের মাধ্যমেই কিডনির সমস্যা ভাল হয়ে যাবে জেনে স্বস্তি পান এনামুল। কিছুদিন ঔষধ সেবনের পর ভাল হয়ে গেছেন ভেবে ঔষধ সেবন বন্ধ করে দেন তিনি।

 

পরিক্ষা-নীরিক্ষার পর ২০১৯ সালে এসে জানতে পারেন তার দুটো কিডনির ৯২ শংতাশই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেছে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত ডায়ালাইসিস করে করে টিকে আছেন তিনি। কিন্তু এই টিকে থাকায় তাকে বিক্রি করতে হয়েছে পৈত্রিক সম্পত্তির সিংহভাগ। ডায়ালাইসিস বাবদ প্রতিমাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ করতে করতে এনামুল এখন নিঃস্ব প্রায়। জরুরি হয়ে পড়েছে কিডনি প্রতিস্থাপন। যার ব্যয়ভার সম্পূর্ণভাবে বহন করা এনামুলের পক্ষে অসম্ভব।

 

এখানেই শেষ নয় এক ছেলে ও দুই কন্যা সন্তানের জনক এনামুলের মেঘলা আকাশের উপাখ্যান। এনামুলের ছোট্র শিশু কণ্যা আছিয়া (০৭) জন্মের পর থেকেই জটিল রোগ লিপুমায় আক্রান্ত। জটিল এই রোগে আক্রান্ত হয়ে দিনকে দিন সরু হয়ে যাচ্ছে আছিয়ার নিম্নাঙ্গ। ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে পঙ্গুত্বের দিকে। অপারেশনের মাধ্যমে আছিয়ার ওই টিউমার কেটে ফেলা যতটা ব্যয়বহুল তার চাইতেও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

 

নিজের কিডনি সমস্যা আর ছোট্র মেয়েটির জটিল রোগ, অর্থের অভাবে বড় ছেলের পড়াশোনা বন্ধ আর পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তি পাওয়া বড় মেয়ের পড়াশোনাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। সবমিলিয়ে মেঘে ঢাকা কালিয়াকৈর উপজেলার সীমানাবর্তী এলাকা তেলিনা গ্রামের মৃত আছর মাস্টারের ছেলে এনামুল হকের পুরো আকাশ। কালিয়াকৈরে বাজারে মোটর সাইকেল মেরামত করেন।

 

সন্তানদের পড়াশোনা ছোট্র আছিয়ার চিকিৎসার জন্য কর্মে ফিরতে চান এনামুল। তাই ভিটেমাটি ছাড়া সর্বশেষ সম্ভল একটি কৃষিক্ষেত বিক্রি করে নিজের কিডনি প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তবে ওই ক্ষেত বিক্রি করে এনামুল সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকার সংস্থান করতে পারবেন। প্রয়োজন আরো ৮-১০ লাখ টাকার। তার এই দুঃসময়ে গ্রামবাসী তার পাশে থাকার উদ্যোগ নিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা সংগ্রহ করেছে। এমতাবস্থায় তার আরো অনেক টাকার প্রয়োজন। কালিয়াকৈর শাখার অগ্রনী ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার-০২০০০১৬০৭০৯৭৬।

 

 

 

 

 

 

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap