আব্দুর রহমান-
একটি গ্রহ,একটি প্রাণী। অবাক করার মতো হলেও এটাই সত্যি যে বালিন প্রজাতির এই তিমি ইতিমধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে একাকী প্রাণী হিসবে পরিচিত লাভ করে।
গল্পটি শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। শত্রু সাবমেরিন শনাক্ত করতে মার্কিন নৌবাহিনীর নির্মিত সোসাস নামে একটি হাইড্রোফোনের একটি অ্যারে কিছু অদ্ভুত সংকেত আসে। যা তিমির গান ছিল এবং এগুলো নীল তিমি গানের শব্দের মতো ছিল। তাড়া সে স্ত্রী নাকি পুরুষ প্রজাতির সে ব্যাপারে এখনো পুরোপুরি কোন তথ্য মিলেনি।
তবে এই তিমির গানের মধ্যে একটি বড় পার্থক্যে ছিল
তার কণ্ঠস্বর অন্য সব বালিন তিমিদের চেয়ে একেবারে আলাদা। একদম ইউনিক কণ্ঠ তার, যেখানে অন্য তিমিরা যোগাযোগের জন্য ১০ থেকে ৪০ হার্জ কম্পাঙ্কের শব্দ ব্যবহার করে, সেখানে এই মেয়ে তিমিটা ৫২ হার্জ কম্পাংক উৎপন্ন করে।
ম্যাসাচুসেটসে উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশন -এর সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী গবেষক বিল ওয়াটকিন্স যিনি নেভির রেকর্ডিং শুনে তার মৃত্যুর আগে একটি সঠিক গবেষণা দিয়ে গেছেন এই তিমি সম্পর্কে। ওয়াটকিন্সের মতে, ৫২ হার্জ কম্পাংক মানে অস্বাভাবিক নয় বরং অনন্যা।
তবে এই তিমি একাকিী পরিচিত হওয়ার মূল রহস্য, তিমিদের মতো তার কোনো বন্ধু কিংবা বান্ধবী নেই! তার এমনকি কোনো পরিবারও নেই। কোন দল, গোত্র কিছুই নেই। নেই তার কোনো প্রেমিকও, কোনো দিনও ছিল না। মিলনের আকাঙ্ক্ষায় গাওয়া তার গানগুলো দুই থেকে ছয় গ্রুপে বের হয়, প্রত্যেকবার ৫ থেকে ৬ সেকেন্ড স্থায়ী হয়।
২০১৩ এর দিকে দ্যা এক্সপ্রেস নামের একটি ব্রিটিশ ম্যাগাজিন দাবি করে, যে তিমির এই অস্বাভাবিক শব্দের মানে হচ্ছে ‘ভালবাসার খোঁজ সে বন্ধ করেছে।
তবে কোনো কোনো বিজ্ঞানীর ধারণা এ তিমি হয়তো একাই থাকতে চায়। তার কোনো সঙ্গীর প্রয়োজন বোধ হয়নি। এ জন্যই সে অন্য তিমির কান পর্যন্ত তার গান পৌঁছাতেই দেয় না। তবে এই তিমিকে নিয়ে গবেষণা এখনও চলছেই।