আসাদুজ্জামান খাইরুল, সাভার প্রতিনিধি
সাভারে রাস্তা পরিষ্কার এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সহযোগিতায়, কাজ শুরু করেছে সাভারের আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনতা।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকালে সাভার উপজেলার আশুলিয়া বাইপাইল মহাসড়ক এবং নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়কে সাধারন আনসার সদস্যদের পাশাপাশি ছাত্র ও সাধারণ জনতা গত কয়েকদিনের সহিংসতায় মহাসড়কে পড়ে থাকা বিভিন্ন আবর্জনা পরিষ্কারে কাজ করছে। এ সময় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও তাদের কাজ করতে দেখা যায়।
দক্ষিণ গাজীর চট আয়নাল মার্কেটের বাসিন্দা ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান খান বলেন, আমরা সকালে আশেপাশের এলাকা ছাত্ররা সুসংগঠিত হয়ে বাইপাইল বাস স্ট্যান্ড মোড় ইউনিক স্ট্যান্ড এবং জামগড়া এলাকায় রাস্তায় পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনা সরাতে ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতায় কাজ শুরু করি। আমরা সবাই অনেক আনন্দের সাথে এই কাজগুলো করছি। এবং প্রচুর সংখ্যক ছাত্র জনতা এ কাজে অংশ গ্রহণ করেছে।
গাজিরচট আকবর মন্ডল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার এবং রিমু আক্তার বৃষ্টি বলেন, দেশকে একটি ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে আমরা আন্দোলন করেছি । এখন আন্দোলন পরবর্তী সময়ে দেশের রাস্তাঘাট খারাপ অবস্থায় থাকবে এটা হতে পারে না তাই আমরা সবাই এ কাজে নেমে এসেছি। আমাদের অনেক ভাই বোন জীবন দিয়েছে শুধু মাত্র দেশকে নিরাপদ করতে । দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা সব সময় দেশমাতৃকার যে কোন কাজে পাশে থাকবো । আমরা ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে আহবান করছি দেশের সকল শ্রেণীর পেশাজীবী মানুষকে যার যার অবস্থান থেকে দেশ গড়ার কাজে সহযোগিতা করতে। এবং হানাহানি ও মারামারি বন্ধ করে প্রিয় মাতৃভূমিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করুন। ছাত্র সমাজের এতগুলো জীবনের এই আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দিয়েন না।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাভার উপজেলার অফিসার রাশেদুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকে সাধারণ ছাত্র জনতা স্বইচ্ছায় আমাদের সহযোগিতা করছে। এরা সাভার উপজেলা বিভিন্ন এলাকা থেকে সুসংগঠিত হয়ে এই কাজে হাত দিয়েছে। এছাড়াও থানা গুলোর নিরাপত্তায় আমাদের আনসার সদস্যরা পালাক্রমে ২৪ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করবে। ইতিমধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আশা করা যায় খুব দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী আশুলিয়া থানা অফিসার মনির উদ্দিন খান বলেন, আমার ৩৫ বছর চাকরি জীবনে যত কাজ করেছি তার ভিতরে আজকের এই সমাজ বিনির্মাণে যেই কাজ করছি এরকম আনন্দ আর কখনো পাইনি। এবং ছাত্র-ছাত্রীদের যেই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, এই ছোট ছোট নিষ্পাপ ছাত্ররা যেভাবে ময়লা পরিষ্কার করছে এতে আমার বিশ্বাস এই দেশ ছাত্রদের হাতেই নিরাপদ। আমাদের সদস্যরা আশুলিয়া থানায় আটজন করে প্রতি সেফটিতে ২৪ ঘন্টা ডিউটি করে যাচ্ছে থানা নিরাপত্তা দেয়ার জন্য ।এছাড়াও আশুলিয়ার প্রতিটি রাস্তায় ট্রাফিকের কাজে এবং রাস্তা পরিষ্কারের কাজে আনসারের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে। আশুলিয়ার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক এবং আশা করি কালকের ভিতরে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।