কালিয়াকৈর প্রতিনিধি:
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আমি যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ছিলাম, তখন সকল সময় ওয়ালটনকে ব্যবহার করেছি। ১০ বছর আগে আমি ওয়ালটনকে যেখানে রেখে গিয়ে ছিলাম, এই ১০ বছরে ১০ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আমি অত্যান্ত খুশি, এদেশের মানুষও খুশি। ওয়ালটন ওয়ালটন যে অঙ্গিকার নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন, তা থেকে তারা বিশ্রুত হয়নি। এই কয়েকদিনের মাঝেই এই প্রথম বারের মতো আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে। মেইড ইন বাংলাদেশ আমরা আমেরিকার বাজারে দেখতে পারবো। তারা আমাদের কম্পেসার নিয়ে যাবে, টেলিভিশন নিয়ে যাবে, স্মার্ট ফোন নিয়ে যাবে এবং এ সকল কিছুই তারা নিয়ে যাবে। এভাবে কাজের মাধ্যমে ওয়ালটন কারখানায় ১ লক্ষের উপর কর্মসংস্থান হবে।
তিনি রোববার বিকেলে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম এলিভেটর কারখানার উদ্বোধন করেন। একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত স্মার্টফোন রপ্তানি, ভারতে বিপুল পরিমাণ এসি রপ্তানি, অল-ইন-ওয়ান ওয়ালটন পিসি এবং ওয়ালটন টিভির নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম ‘আরওএস’ উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কতর্ৃপক্ষের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বেসরকারি হাই-টেক পার্কের স্বীকৃতি পেলো।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ডাক ও টেলি যোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী যুনায়েদ আহমদ পলক, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানার চেয়ারম্যান নুরুল আলম রেজভী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম, কালিয়াকৈর উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার্ কাজী হাফিজুল আমিনসহ ওয়ালটন কারখানার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তিনি আরো বলেন, আর কয়েকদিন পরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালন করবো। তিনি সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙ্গালী। তিনি নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন বাঙ্গালীর জন্য, বাঙ্গালী জাতির অর্থনিতির মুক্তির জন্য। তিনি যুদ্ধ করেছিলেন এই দেশের স্বাধীনতার জন্য, পাশাপাশি তিনি যুদ্ধ করেছিলেন, এই দেশের যারা গরীব মানুষ, হতদরিদ্র মানুষ, যারা বঞ্চিত মানুষ তাদের জন্য। সেই যুদ্ধটি হচ্ছে অর্থনৈতিক যুদ্ধ। তিনি চেয়েছিলেন একটি সুন্দর বাংলাদেশ। যে দেশে কোনো মানুষ না খেয়ে ক্ষুদার জ্বালায় নিবে যাবে না। তাদের জন্য বাচ্চাদের স্বাস্থ্য সেবা, তাদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা, তাদের জন্য লেখাপড়া ব্যবস্থা সকল কিছুই তিনি স্বপ্ন দেখে ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কাধে তোলে নিয়েছিলেন একটি যুদ্ধবিদস্ত দেশ। তিনি পাকিস্তান থেকে ফিরে এসেই এ কাজে নিবেদিত শুরু করলেন। কিন্তু তিনি সে কাজটি করে যেতে পারেন নাই। আপনারা সে ইতিহাস জানেন। তারপর দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি জাতির পিতার স্বপ্ন পুরণে যাত্রা শুরু করলেন। তিনি জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আমাদেও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আজকে ওয়ালটন কারখানার মতো আরো অসংখ্য ওয়ালটন এ বাংলাদেশে হবে।
তিনি বলেন, আমার নিজেরও ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল কোনো এক সময়। আজকে ওয়ালটন কারখানা যে জিনিস গুলো তৈরি করে ফ্রিজ, ইয়ারকন্ডিশনার, টেলিভিশনসহ সেগুলো কোনো এক সময় ছোট্র পরিসরে আমিও শুরু করেছিলাম। পরবর্তিতে আমি যখন দেখলাম, ওয়ালটন আমার চেয়ে আরো শতগুণ বেশি শক্তি নিয়ে এগিয়ে আসতেছে। তখন আমি দেখলাম এখানে আমার প্রতিযোগীতা করে লাভ নেই, আমি ফেল করবো। আমি ফেল করতে চাই নাই, সেজন্য তাই আস্তে করে সরে গেছি। এখন ওয়ালটনের জয় জয় কার। ওয়ালটন এ দেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। যাত্রাপথ ঠিক করে তাদের সেই স্বপ্নের পথে তারা এগিয়ে যাচ্ছেন। তারা বিশ্ববাজারে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, হাউজহোল্ড অ্যাপ্লায়েন্স, কম্প্রেসর ইত্যাদি নিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে কারখানায় পেঁৗছে মন্ত্রীগণ প্রথমে ওয়ালটনের সুসজ্জিত ডিসপ্লে সেন্টার পরিদর্শন করেন। এরপর তারা ওয়ালটনের রেফ্রিজারেটর ও কম্প্রেসর তৈরির প্রক্রিয়া পরিদর্শন করেন। এ সময় ৫৪ জন মেধাবী শিক্ষাথর্ীর হাতে ল্যাপটপ এবং ক্যাশচেক তুলে দেয়া হয়।