বিশেষ প্রতিনিধি-সাভার (ঢাকা)
ছাত্র আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলে সারা দেশে ভেঙে পরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে । পুরোপুরি স্বাভাবিক হওয়ার আগেই সুযোগ বুঝে সারাদেশে দখল ভাংচুর তান্ডব চালায় দুষ্কৃতিকারীরা। পিছিয়ে নেই সুযোগ সন্ধানী কিছু বিএনপির নেতাকর্মীরাও। নেতৃবৃন্দদের নির্দেশ অমান্য করে দখল প্রতিযোগিতায় নামছেন অনেকেই। এর মধ্যে ঝুট ব্যবসার দখলের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহনের বিরুদ্ধে। কারখানার ঝুট দখল চেষ্টাকালে স্থানীয়দের তোপের মুখে পরেন তিনি। তিন ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মাফ চেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন বলে জানায় স্থানীয়রা।
বুধবার (১৪ই আগস্ট) সাভারের বাড়ইপাড়া তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেড নামের কারখানা এলাকায় গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়। এর আগে গত ১৩ই আগস্ট বিকেলে কারখানার ঝুট অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেন মোহন। এখবর ছড়িয়ে পরলে কারখানার ভিতরের অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা। প্রায় তিনঘন্টা পর ক্ষমা চেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে মোহন। এব্যাপারে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মোহনের ছবি সম্বলিত একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওই পোস্টে লেখা হয়, আসাদুজ্জামান মোহন ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সেক্রেটারী আর আওয়ামী লীগের দালালের সহযোগিতায় বাড়ইপাড়া টেক্সটাইলে ওয়েস্টেজ নেওয়ার জন্য আসে। আসার পরে এলাকাবাসী তাকে তিনঘণ্টা আটকে রাখে। পরে ক্ষমা চেয়ে তিনি এলাকা থেকে বিদায় হন।
স্থানীয় বাসিন্দা মোর্শেদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার দিকে কারখানার ভিতরের প্রবেশ করে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহন ও তার সহযোগীরা। পরে কারখানা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঝুট বের করার প্রস্তুতি নেন তিনি। এতে অপর এক দল হামলার প্রস্তুতি নেয়। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে স্থানীয়রা এক হয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নেন। এসময় আসাদুজ্জামান মোহন ভিতরে আটকা পরেন। ঘটনার তিন ঘণ্টা পর সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এলাকা থেকে চলে যান তিনি। গত কয়েক বছর ধরেই এই কারখানার ঝুট নিয়ে অনেক দ্বন্দ্ব ও দখল চেষ্টা চলছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে নতুন করে কোন হতাহত চাই না। এলাকাবাসী সবাই এক রয়েছে যেকোন বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ এলাকাবাসীই করবে।
দখল চেষ্টার ঘটনা জানতে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহন বলেন, আমি কারখানার এক কর্মকর্তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য গিয়েছিলাম। কোন ধরনের ঝুট ব্যবসা দখল চেষ্টা আমি করি নাই। আর এধরনের ঘটনাও ঘটে নাই। আমি তো সাক্ষাৎ শেষে সেখান থেকে চলে এসেছি। আসার পরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
এব্যাপারে তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমি ব্যাংকে রয়েছে। ১০ মিনিট পরে আপনার সাথে যোগাযোগ করবো।
তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেডের এডমিন ম্যানেজার আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, আসাদুজ্জামান মোহন আমাদের ফ্যাক্টরিতে এসেছিল আমাদের ম্যানেজার স্যারের সাথে কথা বলেছেন, তবে কি কথা বলেছেন তা আমি জানিনা এবং কতক্ষণ ছিলেন সেটাও বলতে পারব না।
ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সচিব নাজমুল হাসান অভি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দলের ভাবমূর্তি নষ্টের প্রমান পাওয়া গেলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।