বিশেষ প্রতিনিধি, সাভার ( ঢাকা)
স্বামী স্ত্রীর অবাধ্য থেকে বাধ্য করা, মামলা মোকাদ্দমা জিতিয়ে দেওয়া, বাচ্চা না হলে তার ব্যবস্থা করা, নতুন পুরাতন জিন পরীর আছর, মানুষের ক্ষতি পরীক্ষা ও চিকিৎসা দেয়া হয়।ভিজিটিং কার্ডে এরকম নানাবিধ সার্ভিস উল্লেখ করে, ইসলামিক তদবির সেন্টার খুলে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে।
আশুলিয়ার কান্দাইল এলাকার রাজা বাদশা বাজারে মুফতি মাওলানা সা- দুদ্দীন (২৫) নামের এক যুবক, সরকারি ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ও ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার ব্যবহার করে, একটি ভাড়া বাসায় ইসলামিক তদবির সেন্টার নামে চিকিৎসা কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতারণা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। সে মাদারীপুর জেলার শীবচর এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে।
সরজমিনে তার চিকিৎসা কেন্দ্রে গেলে দেখা যায় রুবেল নামের এক যুবককে স্ত্রীকে বাধ্য করার চিকিৎসা দিচ্ছেন। যুবকের স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে এরকম সমস্যা নিয়ে আসলে তাকে বলা হয় দুই তিন মাসের ভিতরে তার স্ত্রী বাধ্য হয়ে চলে আসবে, তদবির চিকিৎসার মাধ্যমে। এজন্য তাকে খুশি হয়ে কিছু টাকা দিতে হবে ওই চিকিৎসককে। যুবককে ১০০% এই তদবির চিকিৎসায় কাজ হবে বলে জানালেও মিডিয়ার সামনে ঐ চিকিৎসক বলেন ১০০% সিওর দেয়া যাবেনা। কাজ হতেও পারে নাও হতে পারে।
এ ধরনের চিকিৎসালয়ের কোন সরকারি অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে, এই চিকিৎসক জানান তার সরকারি লাইসেন্স ও ট্রেড লাইসেন্স আছে।
লাইসেন্স দেখতে চাইলে তিনি একটি হলফনামা বের করে বলেন কোর্ট থেকে এই লাইসেন্স নেয়া হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, হলফনামার উপরে কলমে লেখা ০৫ একটি সংখ্যা। এই ০৫ সংখ্যাটি ভিজিটিং কার্ডে ব্যবহার করছেন রেজিস্ট্রেশন নাম্বার হিসেবে ঐ চিকিৎস। ট্রেড লাইসেন্স টি দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি। এবং এক পর্যায়ে তিনি জানান লাইসেন্স কোথা থেকে নিতে হয় কিভাবে নিতে হয় তা তিনি জানেন না ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য আরেক ভুক্তভোগী বলেন আমি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দেখে তার উপরে বিশ্বাস এনেছিলাম। মনে করেছিলাম যেহেতু রেজিস্ট্রেশন আছে তার চিকিৎসায় কাজ হবে। এ ধরনের চিকিৎসায় যে কোন সরকারি রেজিস্ট্রেশন হয় না, তা আমি আগে জানতাম না। আমি অনেকদিন যাবত চিকিৎসা নিচ্ছি, তাকে কিছু টাকাও দিয়েছি। কাজ না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আস্তে আস্তে হবে।
তবে ভুয়া রেজিস্ট্রেশন ও ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার কেন ব্যবহার করছেন জানতে চাইলে বলেন, আমি কারো কাছ থেকে নির্দিষ্ট অংকের টাকা চেয়ে নিই না। কারো কাজ হয় কারো কাজ হয় না। আমি কারো সাথে প্রতারণা করিনি। লাইসেন্সের ব্যাপারে আমার ভুল হতে পারে।
এবিষয়ে আশুলিয়া থানার ডিউটি অফিসার এসআই নুরুল বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো ভুক্তভোগী আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ আসলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।