আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দুর্নীতির মামলায় জামিন নিয়ে বহাল তবিয়তে রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হক মৃধা

সোলাইমান হোসাইন রুবেল-  নেত্রকোণা প্রতিনিধি:

 

বাংলাদেশ রেলওয়ে ময়মনসিংহ অঞ্চলের শ্যামগঞ্জ সেকশনে কর্মরত উর্দ্ধতন উপসহকারী প্রকৌশলী এ টি এম নাজমুল হক মৃধার স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৬ মাসের জামিন নিয়ে কারামুক্ত হয়ে কর্মস্থলে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

 

জানা যায়, ০১/০৩/২০১৮তারিখে শ্যামগঞ্জ সেকশনে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে উর্দ্ধতন উপসহকারী প্রকৌশলী এ টি এম নাজমুল হক মৃধা দায়িত্ব পাওয়ার পর হতে কাজের প্রতি উদাসিনতা, ইচ্ছেমতো গোডাউনে রক্ষিত মালামাল বিক্রয়, উর্দ্ধতন কর্মকর্তার অফিস আদেশ টেম্পারিং, উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ উপেক্ষা এবং অধিনস্থ কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ীকরণের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। উর্দ্ধতন কর্মকর্তার অফিস আদেশ টেম্পারিং, উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ উপেক্ষা করে উর্দ্ধতন প্রশাসনকে অবমাননকর সহ সরকারি কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধি-১৯৬১ পরিপন্থি কাজে তিনি জড়িত। তিনি স্বেচ্ছাতারিতার মাধ্যমে অফিসে গরু ও কবুতরের খামার বানিয়ে রেখেছেন।

 

নাজমুল হক মৃধা এসএসএই/ওয়ে/শ্যামগঞ্জ এর অধীন এলসি গেইট নং ই/১০(এ) এর রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত গেইটম্যান শাহজাহান কবিরের চাকুরী স্থায়ীকরণে ঘুষ গ্রহণ করেন। নাজমুল হক মৃধা তার চাহিদামতো আরোও ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় শাহজাহান কবিরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করেন। নেত্রকোণা জেলার সদর উপজেলার সিংহের বাংলা গ্রামের মৃত মিরাজ আলীর ছেলে শাহজাহান কবির বাদী হয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্যামগঞ্জ কার্যালয়ের উর্দ্ধতন উপসহকারী প্রকৌশলী এ টি এম নাজমুল হক মৃধার বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্পেশাল মোঃ নং-০৬/২০১৮ দায়ের করেন।

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় ময়মনসিংহ এর সহকারী পরিচালক এ কে এম বজলুর রশিদ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ১১/০২/২০২০তারিখে আসামী এ টি এম নাজমুল হক মৃধার বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ১৬১/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর আসামী এ টি এম নাজমুল হক মৃধা গত ৫জানুয়ারী আদালতে আত্মসমর্পন করলে বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। ১৫দিন নেত্রকোণা জেল হাজুতে বন্দী থাকার পর মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ৬মাসের জামিন নিয়ে গত ১৯জানুয়ারী কারামুক্ত হন।

 

এব্যাপরে বাংলাদেশ রেলওয়ে ময়মনসিংহ কার্যালয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান শ্যামগঞ্জ সেকশনে কর্মরত উর্দ্ধতন উপসহকারী প্রকৌশলী এ টি এম নাজমুল হক মৃধার গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন বলে জানান।

 

মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয়ের সংস্থাপন শাখার ২১/১১/৭৮ তারিখের ইডি (রেগ-৬) এস/১২৩/৭৮-১১৫(৫০০) নং পত্রে উল্লেখ আছে একজন সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী কোর্টে মামলা হইবার পর জামিনে থাকিলে তাহাকে অবশ্যই সাসপেন্ড করিতে হইবে এবং তাহার বিরুদ্ধে বিভাগী মামলা রুজু করিতে হইবে বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ রেলওয়ে প্রশাসনিক ভবন ঢাকা মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, উর্দ্ধতন উপসহকারী প্রকৌশলী এ টি এম নাজমুল হক মৃধার গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি অবগত। কোর্ট থেকে কাগজ পেলে উর্দ্ধতন উপসহকারী প্রকৌশলী এ টি এম নাজমুল হক মৃধার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করবেন।

 

এছাড়াও নেত্রকোণা রাজুর বাজার রেলগেটের অস্থায়ী গেইটম্যান তাজ্জত আলীর চাকুরী স্থায়ী করার নামে এক লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে আবারো এক লক্ষ টাকা দাবী করলে তাজ্জত আলীকে চাকুরী থেকে অব্যহতি প্রদান করেন। তাজ্জত আলী বাদী হয়ে এটিএম নাজমুল হক মৃধার বিরুদ্ধে নেত্রকোণা অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রট আদালতে ৪০৬/৪২০ ধারায় ১৩০(১)১৮ নং মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap