কুড়িগ্রাম থেকে-
.কুড়িগ্রামে বন্যার পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগ কোনভাবেই পিছু ছাড়ছে না চরাঞ্চলের মানুষের। বন্যা পরবর্তী সময়ে চরাঞ্চলগুলোতে কাজের পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায়
পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করছেন দিন মজুর শ্রেণির মানুষজন। অর্থের অভাবে মেরামত করতে পারছেন না ক্ষতিগ্রস্থ ঘর-
বাড়িও। বন্যা কবলিত এলাকার আমন চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় জমিতে রোপা আমন লাগাতে পারছেন না নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের বেশির ভাগ কৃষক।
সরকারী ভাবে আমনের কমিউনিট বীজতলা তৈরি করা হলেও তা এখনও ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়নি।
অন্যদিকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয়েছে নদ-নদীর ভাঙ্গন।
কুড়িগ্রামে দীর্ঘস্থায়ী বন্যার পানিতে চলাফেরা করার কারণে বেড়েছে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ। সর্দি, কাশি, জ্বর, পাতলা
পায়খানাসহ দেখা দিয়েছে হাত পায়ের চর্মরোগ। এরফলে স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে। বাড়ছে রোগীর পথ্য ও বাড়তি চিকিৎসা ব্যয়। বানভাসীদের কষ্ট লাঘবে চরাঞ্চলে সরকারি
চিকিৎসকদের ভিজিট বাড়ানোর দাবি স্থানীয়দের। চলতি বন্যায় কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলার ৭৫টি ইউনিয়নের
মধ্যে ৫৬টি ইউনিয়নের ৪৭৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। জলবন্দী, নদীভাঙন ও পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা ৩ লাখ।
বন্যায় প্রায় ৬৩ হাজার বাড়িঘর পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে শতশত গবাদিপশু। নলকুপ ক্ষতিগ্রস্থ
হয়েছে ৪২ হাজার ২৩৭টি। বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে শিশুসহ ২২জন। বন্যার পানি বিপদসীমার উপর থেকে কমতে শুরু করার পর থেকে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ। হাত, পা ও
আঙ্গুল ফেঁটে যাচ্ছে। শরীরে বাসা বাঁধছে নানান জটিল রোগ। জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ বন্যাকালিন সময়ে ৮৫টি মেডিকেল টিম গঠনের কথা বললেও দুর্গম চরাঞ্চলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত
হাজার হাজার চরাঞ্চলবাসী। বন্যায় নলকুপ ও লেট্রিন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় তা এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। ফলে রোগ ব্যাধীর প্রকোপ আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করছে স্বাস্থ্য
বিভাগ।
ডা. মো: হাবিবুর রহমান,সিভিল সার্জন, কুড়িগ্রাম জানান, এ পর্যন্ত ডায়েরিয়া ও নিউমেনিয়ারসহ অন্যান্য রোগের সেভাবে প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি। তবে আমাদের আশংকা রয়েছে যে বন্যা পরবর্তীতে পানি নেমে যাওয়ার পর পানিবাহিত রোগগুলো বিস্তাল লাভ করতে পারে। এজন্য আমাদের ৮৫টি মেডিকেল টিম প্রস্তত রয়েছে।