নিউজ ডেস্ক
মর্গে মৃতদেহ স্তূপাকৃতি। আর দেহ রাখার জায়গা নেই। সৎকারের আর্জি জানিয়ে যাদবপুর থানাকে চিঠি এম আর বাঙুর হাসপাতাল সুপারের। সেই চিঠির প্রতিলিপি ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও প্রশাসন নিশ্চুপ!
এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালের মর্গে জমে গিয়েছে লাশের স্তূপ। অবিলম্বে সেগুলির শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হোক। না হলে অন্য দেহ রাখা এবং অন্যান্য কাজের সমস্যা বাড়ছে । এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালের তরফে এমন চিঠি গিয়েছে যাদবপুর থানার কাছে । চিঠিটি সঠিক কি না, সেই নিয়ে অবশ্য প্রশাসনের তরফে কোনও মন্তব্য জানা যায়নি । এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল এর সুপার শিশির নস্করের স্বাক্ষর করা এমনই একটি চিঠি ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
ঘটনার সূত্রপাত ২০ এপ্রিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়ানো ওই চিঠির প্রতিলিপিতে দেখা যাচ্ছে, ১৫ জনের মৃত্যুর তালিকা রয়েছে। প্রত্যেকের নাম, ঠিকানা রয়েছে । রয়েছে মৃত্যুর বিবরণ, তারিখ ও সময়। এমনকি এই ১৫ জনের মৃত্যুর যে তালিকা রয়েছে, তারমধ্যে ৬ জনের নামের পাশে লেখা আছে কোভিড পজেটিভ অর্থাৎ তারা নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। ওই তালিকায় উল্লেখ রয়েছে, একটি দেহের দাবিদার নেই । তিনজনের ঠিকানা থাকলেও তাঁদের পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠেনি। আরও লেখা রয়েছে, ৫ জনকে মৃত্যুর পর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে বলা হয়, 'ব্রট ডেড'।
চিঠিতে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে একটি আবেদন করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ বলছেন যে, দ্রুত এই পরিবারগুলোর সঙ্গে পুলিস যোগাযোগ করুক এবং দেহগুলি শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করুক। না হলে মরদেহ রাখতে চরম অসুবিধা হচ্ছে। এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই চিঠিতে যে ৬ জনের নামের পাশে কোভিড পজেটিভ লেখা রয়েছে, সেই ব্যক্তিরা অন্যান্য বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন । মৃত্যুর পরে জানা যায় তাঁরা নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।
এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২০ এপ্রিল এই চিঠি পাঠানোর পর বেশ কয়েকটি দেহের সৎকার ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় বা বেওয়ারিশ বা পরিবার খোঁজ না নিলে, আইন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় পর পুলিশ প্রশাসনে সেই দেহের সৎকার করে ফেলে। এক্ষেত্রেও তা অনুসরণ করা হচ্ছে। এখনকার নিয়ম অনুযায়ী নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে তাঁর দেহ সৎকারের দায়িত্ব নিচ্ছে প্রশাসন। এখানেও তাই পালন করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে পুলিশ, প্রশাসন বা এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। এই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, হাসপাতালের সহকারী সুপার, হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির আধিকারিক সহ আরও কয়েকজনকে। সমগ্র বিষয়টি নিয়েই প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য ভবন নিশ্চুপ। তাদের কোনও মন্তব্য মেলেনি।
সূত্র: জি ২৪ ঘন্টা