বিশেষ প্রতিনিধি:
আশুলিয়ায় ক্লাসিক পরিবহনে কাজে যোগদান করার তিন দিনের মাথায় খুন হয়েছে ১১ বছরের একটি শিশু।
প্রাথমিকভাবে জানা যায় ক্লাসিক পরিবহনের হেলপারের টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনায় বাসের কন্টাকটারকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ সামিউল ইসলাম।
হত্যার ঘটনাটি সংঘটিত হয় রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে। আশুলিয়া বাইপেল এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত শিশু ফেরদৌস(১১) আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনে কাজে যোগ দেয় হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে। সে শেরপুর জেলার সদর থানার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসচালক রইচ উদ্দিনের ছেলে। আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ বালুর মাঠ এলাকায় পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় থাকতো।
নিহত শিশুর বড় বোন রুবিনা বেগম বলেন, বাবা আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের চালক। ছোট ভাই ফেরদৌস একটু চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় তিন দিন আগে আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনে কাজে পাঠায়। আজকে আমার ভাইয়ের লাশ বাইপাইল রাস্তা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। বাসের হেলপার ও কন্ডাকটর আমার ভাইকে হত্যার পর লাশ সড়কে ফেলে দিয়ে ভোর রাতে তারাই পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশসূত্রে জানা যায়, রাত ১২ টার দিকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে বাস নিয়ে বাইপাইল পৌঁছায়। পরে গাড়ির মধ্যে কন্ডাক্টর হৃদয় ঘুমিয়ে পড়ে। এসময় শিশু ফেরদৌস গাড়িতেই ছিলো। ঘুম ভাঙলে তার পকেট থেকে ৫০০ টাকা খোয়া গেছে বলে জানয় হৃদয়। শিশু ফেরদৌস পারভেজকে টাকা চুরি করতে দেখেছে বলে জানালে। পারভেজ ও হৃদয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা বাঁধে। এসময় পারভেজকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে হৃদয়। চুরির কথা জনিয়ে দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে পারভেজ শিশু ফেরদৌসকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পরে হেলপারের সঙ্গ দেয় কন্টাকটার। পরে দুজন মিলেই নিহত ফেরদৌসের লাশ সড়কে ফেলে রেখে পুলিশকে দুর্ঘটনার খবর দেয়। সাভার হাইওয়ে পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও মরদেহে দুর্ঘটনার কোন চিহ্ন না পাওয়ায় বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। ভোর রাতে আশুলিয়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় হৃদয়কে আটক করা গেলেও পারভেজ পালিয়ে যায়।
এবিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ সামিউল ইসলাম বলেন, রাতেই এঘটনায় আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর হৃদয়কে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে, ৫০০ টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় ওই শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মরদেহটি ময়ণা তদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে অভিযুক্ত পারভেজকে আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।