আজ ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কালিয়াকৈরে টচার্রের পর মৃত ভেবে ফেলে যাওয়ায় বেঁচে গেল এক শ্রমিক।

লিয়াকৈর প্রতিনিধি:

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রাক্তন শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে রাঁতের আধারে তুলে নিয়ে পাষবিক টচার্র করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাষবিক টচার্রের পর মৃত ভেবে নির্জন স্থানে ফেলে যাওয়ায় বেঁচে গেলেন এক শ্রমিক। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গজারিয়া এলাকায় গত রোববার সন্ধ্যা রাতে। বর্তমানে তিনি মুমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আহত হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার তালুক শিমুলতলী এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম (২১)। তিনি উপজেলার বোর্ডঘর এলালাকার স্কয়ার ফামার্সিউটিক্যাল লিমিটেড নামের ঔষধ কারখানার শ্রমিক।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মাস পূর্বে আরিফুল ইসলামের সঙ্গে কালিয়াকৈর উপজেলার গজারিয়া কাঞ্চানপুর এলাকার মৃত জসিম উদ্দিনের মেয়ে সেলিনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর আরিফুলের দাড়ি কাটা নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি দুই পরিবারের লোকজন অবগত হলে তারা মিমাংসা করার চেষ্টা করে। কিন্তু মিমাংসা না হলে ওই পরিবার মিলে তাদের পৃথক করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সিদ্ধান্তে স্বামী-স্ত্রী দুজনই একমত পোষণ করলে উভয়পক্ষের সম্মতিক্রমে গত শুক্রবার তাদের মধ্যে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে খোলা তালাক দেওয়া হয়। এরপর থেকে সেলিনার পরিবার আরিফুলকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে আসছে। গত রোববার ওই ঔষধ কারখানা ছুটি শেষে পায়ে হেটে বাড়ি ফিরছিলেন আরিফুল। ফেরার পথে সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার গজারিয়া এলাকায় মা সিএনজি পাম্পের উত্তরপাশে নির্জন স্থানে পৌছলে আগে থেকে উৎপেতে থাকা প্রাক্তন শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার গতিরোধ করে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠি-সোটা, রড, ষ্টীলের পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। এসময় তারা আরিফুলের পকেট থেকে ৯ হাজার ২০০ টাকা লুট করে। এলোপাথারী মারধরের পর তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত ভেবে তাকে একটি নির্জন স্থানে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন গুংড়ানো শব্দ পেয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানের নীলা-ফুলা জখম রয়েছে। বর্তমানে তিনি মুমুর্ষ অবস্থায় ওই হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় আহতের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে আঃ বারেক, শাহিন হোসেন, মামুন হোসেন, আবু হোসেন ও সোহেল রানার নাম উল্লেখ করে ওইদিন রাতেই কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। উল্লেখিতরা সেলিনার চাচা, ভাই ও চাচাত ভাই বলে জানা গেছে। থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর কালিয়াকৈর থানার এসআই সোহেল রানা সেলিনার ভাই শাহিনকে আটক করে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাকে আবার ছেড়ে দেন ওই পুলিশ কর্মকতার্।
আহত আরিফুল ইসলাম জানান, আমি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছি। তাই দাড়ি রেখেছি। কিন্তু বিয়ের পর সেলিনা আমার দাড়ি কাটতে বলে। এতে রাজি না হলে বিভিন্ন সময় খারাপ আচরন করতো। এর জেরে আমাদের ছাড়াছাড়িও হয়েছে। কিন্তু ওইদিন ঔষধ কারখানা ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে চাচা শ্বশুর বারেক, সুমন্দি শাহিন, মামুনসহ কয়েকজন লাঠি, রড, ষ্টীলের পাইপসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। পাষবিক টচার্রের পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
আহত আরিফুলের মা আয়শা বেগম জানান, মেরে ফেলার জন্যই আমার ছেলেকে তোলে নিয়ে টচার্র করেছে। পরে মৃত ভেবে তাকে নির্জন স্থানে ফেলে গেলে অল্পের জন্য বেঁচে গেল আমার ছেলে।
কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে মিমাংসার জন্য আটককৃত শাহিনকে বাদী পক্ষরাই ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে। তবে মিমাংসায় ব্যর্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap