আজ ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাতাসে ভেঙে পড়লো মুজিববর্ষে দেয়া পাকা ঘর, উপহার নয় এযেনো মরণ ফাঁদ! 

নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ

 

‘মুজিববর্ষে বাংলাদেশে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না’ এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মুজিববর্ষ

অর্থাৎ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার স্বরূপ সারা দেশের ন্যায় নেত্রকোণায় ১০৩০টি গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার।

 

এরই ধারাবাহিকতায় জেলার হাওর বেষ্টিত উপজেলা খালিয়াজুরীতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ৪৪৩টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে দেওয়া হয়েছে এসব ঘর। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা।

 

কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়া সহ বেশির ভাগ ঘরেই ভাঙার উপক্রমে পরিনত হয়েছে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের যাদবপুর হিন্দু পল্লীতে ৩১টি ঘরের মাঝে বেশির ভাগ ঘরেই ভাঙা, ফাটা, এমনকি বাতাসে পুরো ধসে পড়েছে উপহারের এসব পাকা ঘর। পরিতাপের বিষয় হলো সেই বাতাসে পাশে থাকা টিনের ঘরটি ধসে পরেনি ধসে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর।

 

উপকারভোগীদের অভিযোগ—নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারের কারণে ভেঙে পড়ছে এসব বসত ঘর। বরাদ্দের থেকে নিন্মমানের ইট, সাদা বালু, সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার কারণে ফেটে ও ভেঙে পড়ছে এই সব ঘর।

 

গত ২/৩ দিন আগে আকস্মিক বৃস্টি ও হালকা বাতাস আসাতেই এসব ঘর ফেটে ও ভেঙে পড়েছে বলে জানায় উপকারভোগীরা।

 

উপকারভোগীরা আরো জানায়, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় দূর্দশায় ভুগতে হচ্ছে আমাদের। এই স্বপ্নের বাড়ি যেনো আজ মরণ-ফাঁদ হয়ে দাড়িয়েছে। এই ঘর পেতে ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে ৭ হাজার টাকাও বেশি প্রতিটি ঘরে খরচ করতে হয়েছে আমাদের।

 

উল্লেখ্য, খালিয়াজুরীতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার সময় উপকারভোগীদের অভিযোগ ছিলো নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ কাজ হচ্ছে এসব ঘরের। এরই প্রেক্ষিতে কিছুদিন পূর্বেও দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে আজ মরণ ফাঁদ হয়ে দাড়িয়েছে মুজিববর্ষের উপহার।

 

এব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, আমরা মনিটরিং একটি টিম পাঠিয়েছি। যে ভবন গুলোর নির্মাণ কাজে ত্রুটি রয়েছে অবশ্যই সে ত্রুটি অপসারন করে, সম্পূর্ন নতুন ভাবে মানুষের বসবাস উপযোগী করে আমরা নির্মাণ করে দিবো।

 

এবং ভূমিহীনদের আমরা এই ঘর গুলোতে যখন উঠাবো নিশ্চিত ভাবে উঠাবো। যেনো তারা নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারে। যারা এই নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত আছে তাদের আমি এই নির্দেশনা দিয়ে দিবো। সব ত্রুটি সংশোধন করেই আমরা ভূমিহীনদের ঘরে উঠাবো।

 

ঘরের নির্মাণ কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, বারবার দিকনির্দেশনা, পরামর্শ ও মনিটরিং করার পরেও যদি কেউ সত্যিকার অর্থে অনিয়ম করে থাকে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap