ইমরুল হাসান (সাজন)কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামে নারী উদ্যোক্তা মর্জিনা বেগম সৃষ্টি করেছেন অসহায় সাড়ে ৩শতাধিক নারীর কর্মসংস্থান। করোনার কারণে তার এই উদ্যোগ কিছুটা থমকে দাঁড়ালেরও নতুন অর্ডার পাওয়ায় আবার কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে তার সংগঠনে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মর্জিনাদের মত উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ালে দরিদ্রতম এ জেলায় ক্ষুদ্র শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটার পাশাপাশি সৃষ্টি করবে কর্মসংস্থান। ভূমিকা রাখতে পারবে জাতীয় অর্থনীতিতে।
জেলা শহর থেকে ২৬ কি.মি. দক্ষিণে উলিপুর উপজেলায় অবস্থিত ‘‘তবকপুর মহিলা উন্নয়ন সমিতি’’। অন্য নারী উদ্যোক্তাদের দেখে মর্জিনা বেগম সংগঠন খুলেছিলেন ১৯৯৬ সালে। পুঁজি না থাকায় এগুতে পারেননি। থমকে গেছেন বারবার। তবে ২০১৬ সালে নকশী কাথা তৈরী করে নজর কাড়েন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় অর্ডার পান বেঙ্গল ক্রাফটের সাথে। সেখানে এক বছর কাজ করার পর করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় অর্ডার। এরপর ২০২০সালে ফ্রেন্ডশীফ বাংলাদেশের সাথে নতুন করে চুক্তি হয়।
এখন তাদের সাথে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করছেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন মেলায় পণ্য নিয়ে অংশগ্রহন করেন তিনি। বর্তমানে তার কারখানায় নকশী কাথা, বালিশ ও বালিশের কভার, শাল ও শাড়ীতে ফুল তোলা, পাট দিয়ে গয়না, কাপড়ের গয়না, পাপসের দৃষ্টিনন্দন কাজ করছেন। এখন প্রত্যন্ত এলাকায় এই কাজের ফলে এলাকার অসহায় নারীরা কাজ পেয়েছেন। সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান। তার কারখানায় বেশিরভাগ বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও হতদরিদ্র নারীরা কাজ করছে। এতে নিজেদের সংসার নির্বাহ করার পাশাপাশি সন্তানদের লেখাপড়া করার সুযোগ তৈরী হয়েছে।
মর্জিনা বেগম, নির্বাহী পরিচালক, তবকপুর মহিলা উন্নয়ন সমিতি, উলিপুর, কুড়িগ্রাম জানান,
পাট দিয়ে আমার এখানে বিভিন্ন ধরণের কাজ করা হয়। বর্তমানে প্রায় ৩৬০জন নারী কাজ করছেন। এই কাজের ফলে উভয়ের উপকার হচ্ছে। সরকার মোটা অংকের ঋণ বা অর্থ বরাদ্দ দিলে আমি আরো এগিয়ে যেতে পারবো।
মাহমুদা বেগম শরীফা, মার্কেটিং ডেভেলপমেন্ট অফিসার, দি এশিয়া ফাউন্ডেশন, রংপুর অঞ্চল বলেন
বিভিন্ন বায়ারের সাথে আমরা লিংকেজ করে দিচ্ছি। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা বা ব্যাংক যদি এসব উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে তারা উন্নতি করতে পারবে। এলাকার চিত্র পাল্টে যাবে।
মকবুল হোসেন মানিক, ইউপি মেম্বার, ৫নং ওয়ার্ড, তবকপুর ইউপি, উলিপুর, কুড়িগ্রাম বলেন,
বিভিন্ন বায়ারের সাথে আমরা লিংকেজ করে দিচ্ছি। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা বা ব্যাংক যদি এসব উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে তারা উন্নতি করতে পারবে। এলাকার চিত্র পাল্টে যাবে।
মো: জাহাঙ্গীর আলম, উপ-ব্যবস্থাপক, বিসিক জেলা কার্যালয়, কুড়িগ্রাম জানান কুড়িগ্রাম জেলায় প্রায় ৮ হাজার ক্ষুদ্র কুটির ও কারুশিল্প রয়েছে। বিসিকে প্রায় দেড় কোটি টাকার রিভলভিং ফান্ড রয়েছে। সেখান থেকে মর্জিনা বেগমকে ১ লক্ষ টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। সে একজন সফল উদ্যোক্তা। বিসিকের পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের পাশে দাঁড়ালে ক্ষুদ্র শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারবে।