আজ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কালিয়াকৈরে মাদ্রাসার আড়ালে বনের জমি দখল

ফজলুল হক, কালিয়াকৈর(গাজীপুর)প্রতিনিধি:
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে চলছে বনের জমি দখল ও গরুর খামার, বসত বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ। উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় দারুল উলুম মাহামুদ নগর মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে স্থানীয় লোকদের মারধরসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত শিক্ষক দারুল উলুম মাহামুদ নগর মাদ্রাসার  প্রিন্সিপাল ও উপজেলা ওলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা মুফতি এমদাদুল হক (৩৮)। তিনি উপজেলার ডাইনকিনি এলাকার সিরাজুল ইসলাম ওরফে খোদা বক্সের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,  উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় মনোয়ারা বেগম নামে এক বৃদ্ধার লক্ষাধিক টাকা মূল্যের একটি গাভী মাদ্রাসায় ঢুকে পড়লে এমদাদুলের ভাই আশরাফুল ইসলাম এলোপাথাড়ি পিটিয়ে গাভীটির পা এবং ঘাড় ভেঙ্গে দেয়। পরে সেটি মাত্র ২০ হাজার টাকায় কসাইয়ের কাছে বিক্রি করা হয়। এরপর তিনি ওই ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানা থেকে অভিযোগ প্রত্যাহারের শর্তে মাওলানা এমদাদ ও তার ভাই মাওলানা আশরাফসহ বেশ কয়েকজন মহিলার বাড়ীতে গিয়ে তাকে একটি গাভী কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও তাকে গাভী কিনে দেননি। অসহায় মনোয়ারা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান ’একটি অবুঝ প্রাণীকে এভাবে নির্মমভাবে যারা হত্যা করতে পারে আল্লাহ তাদের বিচার করবেন’।
এতিমখানা ও মাদ্রাসাকে পুঁজি করে এমদাদুল হক নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে। তার অপকর্মের সহযোগী হিসেবে দুই ভাই মাওলানা লিয়াকত হোসেন ও মাওলানা আশরাফুল ইসলামকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন।
প্রায় ৫০শতাংশ জমি মাদ্রাসার নামে থাকলেও আরও শত শত গজারি গাছ কেটে বনের জমি দখল করে বসত বাড়ি গরুর খামার ও বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। সেখানে এতিমখানা বিভাগ থাকলেও কোন এতিম ছাত্রদের লেখাপড়ার সুযোগ নেই।
এছাড়া  গত ১২ আগস্ট ২০২০ তারিখ রাত ৯টার দিকে এমদাদুল হকের নেতৃত্বে তার ভাই ইয়াকুব, মোহাম্মদ আলী, আশরাফুল ইসলাম এবং লিয়াকত সংঘবদ্ধভাবে তাদের ছোট ভাই ইছহাকের স্ত্রী সুমিকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে অজ্ঞান অবস্থায় অন্যত্র ফেলে রেখে চলে যায়। এই ঘটনায় সুমি বাদী হয়ে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ সিরাজগঞ্জ আদালতে তাদের নাম উল্লেখ্য করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।
চন্দ্রা বন বিট কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম  বলেন, কেউ যদি বনের জমি দখল করে গরুর খামার বসতবাড়ি নির্মাণ ও দোকানপাট গড়ে তোলেন তার বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই আমরা ব্যবস্থা গ্রহন  করবো এবং উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চন্দ্রা দারুল উলুম মাহামুদ নগর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতি এমদাদুল হকের সাথে যোগাযোগের জন্য চন্দ্রাস্থ মাদ্রাসায় গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি পালিয়ে যান। তবে মাওলানা এমদাদুল হকের ছোট ভাই মাওলানা আশরাফুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশে কিছু জায়গা ও উত্তর-পশ্চিম পাশের গরুর খামারে সরকারি বনের জায়গা রয়েছে। শুধু আমরা কেন অনেকেই তো সরকারি জায়গা দখল করে বিভিন্ন কিছু তৈরি করেছে।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap