ফজলুল হক, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শনিবার দুপুরে একটি আঞ্চলিক সড়কের চলাচলরত সিএনজি ও অটোরিকশা চালকদের দীর্ঘ বিরোধ নিরসনের লক্ষ্যে আলোচনা সভা করেছে ইউপি পরিষদ। এ সভায় পরিবহনে চাঁদাবাজি, মারধর, হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
আলোচনা সভা ও ভুক্তভোগী সুত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার বাড়ইপাড়া-মহড়াবহ আঞ্চলিক সড়কে প্রায় শতাধিক সিএনজি ও ৩ শতাধিক আটোরিকশা চলাচল করে। দীর্ঘদিন ধরে ওই সড়কে রিকশা চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে আসছে সিএনজি চালক, স্থানীয় অটোটেম্পু মালিক সমিতির বাড়ইপাড়া শাখা ও শ্রমিক ইউনিয়ন বাড়ইপাড়া শাখার লোকজন। এক পর্যায় তারা ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে সমিতিতে ভর্তি হতে বাধ্য করে। এছাড়াও তারা প্রতি সিএনজি বাবদ প্রতিদিন ৩০ টাকা জিপি ও মাসিক ৩০০ টাকা এবং প্রতি রিকশা বাবদ প্রতিদিন ৩০ টাকা জিপি ও মাসিক ১০০ টাকা করে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছে। বিশেষ করে চাঁদা না দিলে রিকশা চলতে দেয়া হচ্ছে না, তাদের চাবি কেড়ে নেয়া হচ্ছে। এমনকি ষ্টেশনে গেলে রিকশা আটক করেও রাখে এসব সিএনজি চালক ও সমিতির নেতারা। রিকশা চালকরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে সমিতিতে ভর্তি হয়ে জিপি ও মাসিক চাঁদা দিলেও সিএনজি চালকদের মতো আমাদের সুবিধা দেয় না। উল্টো আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় মারধরও করা হয়ে থাকে। এ থেকে পরিত্রান চান তারা। সিএনজি ও অটোরিকশা চালকদের মধ্যে রেশারেশিতে হয়রানির শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। এসময় পরিবহনে চাঁদাবাজি, মারধর, হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা অভিযোগ উঠলে সিএনজি চালক, সমিতির নেতারা সভায় ছেড়ে চলে যায়। এতে ক্ষুব্দ এলাকাবাসী।
এব্যাপারে জানতে অটোটেম্পু মালিক সমিতির বাড়ইপাড়া শাখার সভাপতি বেনজির আহম্মেদ মুক্তারের ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে শ্রমিক ইউনিয়ন বাড়ইপাড়া শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সফি উদ্দিন মৃধা জানান, করোনার আগে অটোরিকশা আমাাদের সাথেই ছিল। করোনার আসার পর থেকে তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয় না। এছাড়া তাদের কোনো মারধরও করা হয়নি।
ওই সভার সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, গত শুক্রবারও এসব ঘটনা নিয়ে মারামারি হয়েছে। দীর্ঘদিনের বিরোধ নিরসনের জন্যই এ আলোচনা সভা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই পুরো সড়কটি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে। তাই ইউনিয়ন পরিষদের লাইসেন্সেই এ সড়কে রিকশা চলবে।
কালিয়াকৈর থানার ওসি (তদন্ত) রাজিব চক্রবতর্ী জানান, এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।