আজ ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দরগামী অ্যাপ্রোচ সড়কের বেহাল দশায় ভোগান্তিতে পড়েছে আমদানি রপ্তানিকারকরা

কুড়িগ্রাম থেকে-

দেশের ১৮তম স্থলবন্দটির সড়ক সংস্কার কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ধীরগতি ও অনিয়মের কারণে টানা বৃষ্টিতে খানা-খন্দে ভরে গেছে সোনাহাট ব্রিজ থেকে স্থল বন্দরগামী ৩.৪৩ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক।জানা গেছে, এডিপ্থির অর্থায়নে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ৪৪ কোটি ৬২ লক্ষ ৮হাজার ৮২৪ টাকা ব্যয়ে ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সোনাহাট ব্রিজ থেকে স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কের কাজ শুর“ করা হয় ৫ ডিসেম্বর ২০১৯ সাল।সড়কটি বাস্তবায়ন করছে রোডস এন্ড হাইওয়ের কুড়িগ্রামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টার প্রাইজ প্রা: লি: বন্দর ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সড়ক সংস্কারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ধীর গতি ও চরম গাফিলাতির কারণেই স্থলবন্দরগামী সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।একটু বৃষ্টি হলেই পণ্যবাহী ট্রাক গর্তে ফেঁসে যাচ্ছে। এতে বিকল হয়ে যাচ্ছে ট্রাকের ইঞ্জিন।তারা আরো জানায়, স্থলবন্দরগামী এই সড়কে প্রতিদিন প্রায় ২০০ ভারতীয় গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করতো কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে বর্তমানে গাড়ি আসছে ২০ থেকে ৩০টি।ফলে একদিকে যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার অপরদিকে দিনদিন বন্দর ব্যবসায়ীদের লোকসানের পাল্লাও ভারী হচ্ছে ।
পত্র পত্রিকায় লেখালেখির পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুর“ করলেও ৪/৫জন শ্রমিক আর ১টি ছোট্ট ঢালাই মেশিন দিয়ে কাজ করে কাজ এগিয়েছে মাত্র ২শ গজের মত।বিজিবি চেক পোষ্টের পাশের দোকানদার রজব আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তার বেহাল দশার কারণে দোকানগুলোতে লোকজন আসতে পারছেনা ফলে বিক্রি কমে যাওয়ায় তারা লোকসানের মুখে পড়েছে এবং মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার আবুল হোসেন ও খলিল শেখ বলেন, পণ্য বোঝাই ট্রাক কাদা কিংবা খানা-খন্দে ফেঁসে গেলে গাড়ির অনেক যন্ত্রপাতি বিকল ও ভেঙ্গে যায় এগুলো মেরামত করতে দুই চার দিন সময় লেগে যায়। ফলে আমরা বাংলাদেশে ট্রাক নিয়ে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি।
আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী এরশাদুল হক ক্ষোভের সাথে জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণে রাস্তার এই খারাপ অবস্থা।আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে সড়কের এই অবস্থা । আমরা বারবার সংশি­ষ্টদের অবগত করলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি।ব্যবসায়ীরা এল সি করলেও রাস্তার দুরাবস্থার কারণে আনতে পাড়ছে না মালামাল। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার ।
বন্দর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর কিবরিয়া জলিল তুহিন এ প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমানে আসামে সহিংস অবস্থা বিরাজ করার কারণে এ বন্দরটি বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ থাকে।উপরন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হয়ে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০টি গাড়ি বিকল হয়ে পড়ায় ভারত থেকে গাড়ি কম আসছে।
রোডস এন্ড হাইওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নুরায়ইন এর কাছে সোনাহাট স্থলবন্দরগামী সড়কটির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়ে ঠিকাদারের সাথে কথা বলেছি, তারা শীঘ্রই বন্দরগামী সড়কটির কাজ শুর“ করবে বলে জানিয়েছে।
অনেক চেষ্টা করেও সড়কটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রামের মোজাহার এন্টার প্রাইজ প্রা: লি: এর কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap